গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের সময় এবিএম ফ্যাশন নামের পোশাক তৈরির কারখানায় অগ্নিসংযোগ ও আগুনে পুড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর গতকাল বুধবার ৯ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদলত।

এর আগে কারখানা নিরাপত্তাকর্মী গোলজার হোসেন বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে কোনাবাড়ি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- গাজীপুরের আমবাগ পূর্বপাড়া এলাকার মো. শের আলী (১৯), কোনাবাড়ী এলাকার মো. রিফাত (১৯), আমবাগ এলাকার খোবায়েত (২০), কোনাবাড়ী কুদ্দুসনগর পুকুরপাড়া এলাকার মো. নূর হোসেন (১৮), আমবাগ এলাকার শান্ত তালুকদার (২১), বাইমাইল এলাকার মো. ইয়াসিন (১৯), কোনাবাড়ী এলাকার মহিদুল ইসলাম (২০), হরিনাচালা সেলিমনগর এলাকার মো. তোফালে (২২) ও আমবাগ পূর্বপাড়া এলাকার রহিম বাদশা (২২)।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোনাবাড়ি এলাকার এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড নামের একটি পোশাক  কারখানায়  শ্রমিক আন্দোলনের কারণে গত সোমবার দুপুরের পর কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। ওই দিন বিকেলে বিক্ষোভ করে কারখানাটি ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন শ্রমিকেরা।

বেতন-ভাতার বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত নাম উল্লেখ করা ৯ জনসহ অজ্ঞাত ৭০০ থেকে ৮০০ জন শ্রমিক মেইন গেট, সীমানা দেওয়াল ও পেছনের গেট ভেঙে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এ সময় কারখানার নিরাপত্তা কর্মী ও অন্য কর্মচারীরা বাধা দিলে উত্তেজিত শ্রমিকেরা ইট পাটকেলে নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে হামলাকারীরা কারখানার নিচ তলা থেকে পাঁচ তলা পর্যন্ত বিভিন্ন ফ্লোরের অফিস কক্ষ, বিভিন্ন মেশিনারিজ, গুরুত্বপূর্ণ গার্মেন্টস এক্সোসরিজ ফেব্রিক্স, তেরি পোশাক, ফেয়ার প্রাইজ সপ, জেনারেটর, কমপ্রেসার ও এসি ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি করে এবং পেট্রোল দিয়ে কারখানার নিচ তলা থেকে চার তলা পর্যন্ত অফিস, ফ্লোর, ফেব্রিক্স গোডাউন, কাটিং এবং সুইং সেকশনে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রন করে। পরে কারখানার ভেতর থেকে ইমরান নামে এক শ্রমিকের পুড়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার হয়।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার কারখানা নিরাপত্তাকর্মী গোলজার হোসেন বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।

কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, কারখানা ও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অনেককে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্য ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বুধবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।indfi/tv